সর্বশেষ

রাজউকের অধীন নতুন ড্যাপ কার্যকর, প্রজ্ঞাপন জারি

প্রকাশ :


২৪খবরবিডি: 'রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অধীন এলাকায় নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) গতকাল মঙ্গলবার থেকে কার্যকর করা হয়েছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় গতকাল এসংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর মাধ্যমে ২০১০ সালে পাস হওয়া ড্যাপ কার্যকারিতা হারাল। তবে এই প্রজ্ঞাপন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ২০১০ সালের ড্যাপের অধীনে যেসব কাজ করা হয়েছে, সেসবের বৈধতা দেওয়া হয়েছে।'
 

রাজধানী ঢাকাকে একটি আধুনিক ও বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়ে তুলতে ২০ বছর মেয়াদি এই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। জানা গেছে, কার্যকর হওয়া ড্যাপে রাজউকের আওতায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের মোট এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে ৪৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে ১৯৮ কিলোমিটার জলাধার। পরিকল্পনায় ঢাকার চারপাশের ৫৬৬ কিলোমিটার নদীপথ সচল, এক হাজার ২৩৩ কিলোমিটার সড়ককে হাঁটার উপযোগী করে তোলা, শহরের বিদ্যমান কাঠামো ভেঙে স্কুলভিত্তিক উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এর বাইরে ঢাকায় সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলতে সড়ক, জল ও রেলপথকে গুরুত্ব দিয়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ মাধ্যম গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে।রাজউক বলেছে, ড্যাপে এলাকার ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বিবেচনা করে ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসযোগ্যতার সূচকে ঢাকা শহরের অতি নিম্ন অবস্থানের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও ঘনবসতি। তাই ঢাকার বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সুবিধা ও পরিষেবার বিপরীতে ভবনের উচ্চতা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।


রাজউক সূত্রে জানা যায়, ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রথমে ১৯৯৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালের জুনে ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশ হলেও তাতে অসংগতির অভিযোগ ওঠে। এতে ড্যাপ পর্যালোচনার জন্য সাত মন্ত্রীকে নিয়ে একটি 'মন্ত্রিসভা কমিটি' গঠন করে সরকার। পরে আবারও ড্যাপ সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রাজউকের অধীন নতুন ড্যাপ কার্যকর, প্রজ্ঞাপন জারি

ফলে বাস্তব রূপ পায়নি প্রথম পরিকল্পনা। রাজউক সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের মার্চে সংশোধিত ড্যাপ প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ড্যাপ চূড়ান্ত করার কথা ছিল। কিন্তু পরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এই সময়েও ড্যাপ প্রণয়নের কাজ শেষ করতে না পারায় এ বছরের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করে রাজউক।
 

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি এলাকায় আবাসিকের পাশাপাশি বাণিজ্যিক এলাকারও চাহিদা থাকে। এ জন্য ড্যাপের মধ্যে কোনো এলাকাকে শুধু আবাসিক বা বাণিজ্যিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। এলাকাভিত্তিক মিশ্র ব্যবহারকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে বিনিয়োগবান্ধব অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে জোর দেওয়া হয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক পরিকল্পনার মাধ্যমে মূল অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনঘনত্ব ও স্কুল জোনিং এবং জোনভিত্তিক পুনঃ উন্নয়ন পলিসি বাস্তবায়নের সুপারিশ ও নীতিমালা করা হয়েছে। 'রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম ২৪খবরবিডিকে বলেন, 'চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সংশোধিত ড্যাপ প্রণয়ন করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। নগরে বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য নগর পুনঃ উন্নয়ন, জনঘনত্ব জোনিং, জোনভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনাসহ নানা কৌশল নতুন ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ঢাকা মহানগরীসহ রাজউক এলাকাভুক্ত এলাকা পরিকল্পিত নগরায়ণের রূপ নেবে।' তিনি আরো বলেন, 'নতুন ড্যাপ কার্যকর হলে রাজধানীসহ আশপাশে ব্যাপক পরিবর্তন হবে। আমরা এবার ড্যাপের বিষয়গুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের দিকে যাব।'

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত